সাতকাহন প্লাস নিউজ ডেস্ক: অত্যাধিক গরমে পুড়ছে দক্ষিণবঙ্গ। গরমে হাঁসফাঁস দশা সবারই। দু-এক দিনের ছুটি পেলেই পিঠে ব্যাগ চাপিয়ে ঘুরে আসতে মন চায় দূর থেকে (West Bengal Travel)। অনেকেই ভাবেন গরমে পাহাড়ে গেলে একমাত্র স্বস্তি! কিন্তু সেটাই যথেষ্ট নয়। সমুদ্র সৈকত-ও গ্রীষ্মের ছুটিতে হয়ে উঠতে পারে আপনার আলটিমেট ডেস্টিনেশন। গরমের ছুটিতে অনেকেই নিজেদের ঘোরার তালিকায় দিঘা (Digha), মন্দারমনি (Mandarmani), তাজপুরকে (Tajpur) রাখেন। তবে এবার একটু আলাদা হোক। প্রচলিত জায়গা ঘোরাফেরা ছেড়ে অফবিটের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া যাক। আমাদের ঘরের কাছেই এমন এক আশ্চর্য সমুদ্র সৈকত (Offbeat Sea Beach) রয়েছে, যা অনেকের চেনা নয়। এবারের গরমের ছুটিতে তাই রওনা দেওয়া যাক অচেনা সমুদ্র সৈকত লালগঞ্জের (Lal Ganj) উদ্দেশ্য।
অত্যন্ত শান্ত নিরিবিলি একটা সমুদ্র সৈকত। খুব দূরে নয় কলকাতা থেকে। হাতে গোনা কিছু সময় লাগে পৌঁছতে। তবে একবার পৌঁছে গেলে মজাই মজা! উত্তাল সমুদ্রের দাপটে ঢেউ আছড়ে পড়ে সাদা বালির তটভূমিতে। নীল রঙা জলে খেলা করে রোদ্দুর। রাত্তির হলে সে এক মায়াবী পরিবেশ! চাঁদের আলোয় আরও মায়াবী হয়ে ওঠে দৃশ্যপট। ছোট ছোট ঢেউ তখন কানে কানে শোনার গল্প। নিঝুম রাতে বিছানায় শুয়ে শোনা যায় সাগরের মধ্যরাতের ইতিকথা। আশেপাশে নেই কোলাহল। বাতাসে নেই দূষণ। সাগরের হাওয়া গায়ে লেগে আরাম দেয়। সন্ধ্যা কেটে যায় সাগরের ধারে। এক পেয়ালা চা নিয়ে গল্প করতে পারেন আপনার প্রিয় মানুষটির সঙ্গে। হাতে দু দিনের ছুটি নিলেই ঘোরা হয়ে যাবে লালগঞ্জ। সেই দুদিনের ছুটি যেন চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে মনের পিঞ্জরায়।
সাদা বালির সমুদ্র সৈকতের পাশেই রয়েছে ঘন ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। ফাঁকা সমুদ্র সৈকতের গা ঘেসে বেড়ে উঠেছে ঝাউ বনের সারি। সাদা বালি সরিয়ে মাঝেমধ্যেই মাথা তুলে দাঁড়ায় লাল কাঁকড়া দল। সাদা বালির রাজত্বে মাঝে মধ্যেই সমাবেশ শুরু করে তাঁরা। লাল সাদা এ এক অপরূপ মিশ্রণ লালগঞ্জে দেখা যায় যখন তখন! জোয়ারের সময় জল এসে ভিজিয়ে দেবে আপনার গোড়ালি। আর ভাঁটার সময় জল চলে যাবে অনেক দূরে। তখন দৌড়ে ছুঁতে হবে সাগরের অনন্ত জলরাশি। চাইলে স্নান করে নিন। রাত্রীবাস করুন সমুদ্রের ধারে তাঁবুতে। ঢেউয়ের গর্জনের মাঝে সাক্ষী থাকুন সে এক রহস্যময় রাত্রির! লালগঞ্জের বর্ণনা শুনে বুঝি একটিবারের জন্য যেতে ইচ্ছে করছে সেখানে? তাহলে জেনে নিন কিভাবে যাবেন, কখন যাবেন ভ্রমণের খুঁটিনাটি তথ্য।
১) কিভাবে যাবেন লালগঞ্জ?
কলকাতা থেকে বেশি দূরে নয়। যাওয়ার ঝক্কি তেমন নেই। শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে চলে যান নামখানা। সেখান থেকে অটোতে অথবা টোটোতে পৌঁছে যেতে পারেন সমুদ্র সৈকতে।
২) কোথায় থাকবেন লালগঞ্জে?
লালগঞ্জের সমুদ্র থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে রয়েছে এখানকার জনপ্রিয় ‘ঘরে-বাইরে বিচ স্টে’। এখানে আপনি তাঁবুতে রাত্রিবাসের অভিজ্ঞতা পাবেন। দুই ধরনের শয্যা রয়েছে। দুজনের এবং চারজনের। একে তো সাগর ধারে থাকা। তার ওপর রয়েছে আধুনিক সুবিধা। দুই ধরনের তাঁবুতেই রয়েছে কুলার আর ফ্যানের ব্যবস্থা। টেন্টে শুয়ে শুনতে পাবেন সমুদ্রের গর্জন। মাঝে মধ্যে সাগরের হাওয়া এসে ছুঁয়ে যাবে আপনাকে।লালগঞ্জের সমুদ্র সৈকতের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পেতে দুই দিনের ছুটি নিয়ে চলে আসুন। এখান থেকে ঘুরে নেওয়া যায় হেনরি আইল্যান্ড, বকখালি-সহ আরো বেশ কিছু সাইট সিন। লালগঞ্জে এসে ঘুরে যাওয়ার খরচ মোটামুটি ৫ হাজার। একবার ঘুরে গেলে আসতে ইচ্ছে করবে বারবার।
বিনোদন, টেলিভিশন, লাইফস্টাইল, ট্রাভেল, ব্যবসা, টেকনোলজি, শিক্ষা, কর্মসংস্থান সংক্রান্ত আরও খবর পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে।
বাংলার খবর, বাঙালির খবর। আমরা আপনাদের কাছে দ্রুত খবর পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর।