Follow Satkahan Plus at Google News
গুগল নিউজে আমাদের পড়ুন


সাতকাহন প্লাস নিউজ ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের জীব বৈচিত্র্য এর আগেও বিজ্ঞানীদের আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। বসন্ত আসলেই পলাশ ফুলে ছেয়ে যায় বঙ্গভূমি। বাংলার নির্দিষ্ট প্রান্তে পলাশ ফুলের আকর্ষণে ছুটে যান সাধারণ মানুষ। প্রকৃত অর্থে পলাশ ফুল আমরা লাল বলেই চিনি। লোহিত বর্ণের এই ফুল যেন বসন্ত প্রকৃতিতে আগুন ধরায়। তবে পুরুলিয়ার আনাচে কানাচে হলুদ পলাশের সারিও চোখে পড়ে। লাল হলুদ পলাশ পেরিয়ে এবার বিস্ময় ফুলের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। বঙ্গভূমিতেই মিলল বিরল শ্বেত পলাশ এর খোঁজ। ‌একটি দুটি নয়, বনমহল পুরুলিয়া জুড়ে অন্ততপক্ষে আটটি জায়গায় ১৫ টি বিড়াল শ্বেত পলাশের সন্ধান পেল বনদপ্তর। ‌শ্বেত পলাশ গাছগুলিকে চিহ্নিত করে সংরক্ষণের বন্দোবস্ত শুরু করল বন বিভাগের কর্তারা। ‌

বঙ্গভূমিতে মিলল শ্বেত পলাশের সন্ধান!

শ্বেত পলাশ অর্থাৎ সাদা রংয়ের পলাশ। পুরুলিয়া বনভূমিতে ধবধবে সাদা বর্ণের পলাশ ফুল নজর কাড়ে বন বিভাগের। বিজ্ঞানীরা বলছেন এই ফুল বিরল প্রজাতির। পৃথিবীর খুব কম জায়গাতেই দেখা মেলে এই গাছের। শ্বেত পলাশ সংরক্ষণে তাই তৎপর হয়েছে বনদপ্তর। ২০২৩ সালে প্রথম শ্বেত পলাশ গাছের সন্ধান পান পুরুলিয়া শহরের জেলা স্কুল মোড় এলাকার বাসিন্দা আড়শা ব্লকের ভ্রমরটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক উজ্জ্বল কুমার দত্ত। এই সাদা পলাশ আসলেই দুষ্প্রাপ্য! শিক্ষক উজ্জ্বল কুমার দত্ত নিজের সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে শ্বেত পলাশের ছবি শেয়ার করতেই ‌তা অল্প সময়ের মধ্যে ভাইরাল হয়ে পড়ে। বহু পর্যটক শিক্ষক কে ফোন করে জানতে চান শ্বেত বর্ণের পলাশের সন্ধান কিভাবে মিলবে। লাল ও বাসন্তী বর্ণের পলাশ ফুলের সঙ্গে শ্বেত পলাশ ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে ভ্রমণার্থীদের মধ্যে। দলে দলে মানুষ পুরুলিয়ায় ভিড় করতে থাকেন শ্বেত পলাশের একটিবার দর্শন পেতে।

আরো পড়ুন  West Bengal Offbeat Tourism: পকেটে মাত্র ২৫০ টাকা থাকলেই প্রকৃতির কোলে ভ্রমণ! দোলের ছুটিতে ঘুরে আসুন অফবিট উত্তরবঙ্গ

পুরুলিয়ার পর্যটন ও শ্বেত পলাশ

বলাই বাহুল্য পুরুলিয়ার পর্যটনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে পলাশ ফুলের সৌন্দর্য। সারা বছর এই জেলায় যত না ভিড় থাকে, বসন্তে ভিড় দ্বিগুণ হয়ে পড়ে পলাশ ফুলের সৌন্দর্য দেখতে। এবার সেই সৌন্দর্যের সঙ্গে যুক্ত হলো বিরল কৃতিত্ব। বাংলার কোলে ফুটে থাকা শ্বেত (সাদা) পলাশ সংরক্ষণের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বনদপ্তর। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “পুরুলিয়ার পলাশ বাংলার পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত। এই পলাশ সংরক্ষণের জন্য বনদপ্তর যে রকম নির্দেশ দেবে, ঠিক সেভাবেই পলাশ সংরক্ষণের বন্দোবস্ত করা হবে।” ইতোমধ্যে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে বন বিভাগ। সূত্রের খবর শ্বেত পলাশ ফুলের কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তে তার যত হুড়োহুড়ি পড়ে যায় জনসাধারণের মধ্যে। তাছাড়া গাছের দাম, লিজ দেওয়া নিয়ে প্রায় ৮০ লক্ষ দর ওঠে যার ফলস্বরূপ ক্ষত দেখা যায় শ্বেত পলাশ গাছে।

শ্বেত পলাশের সংরক্ষণ

পুরুলিয়া বনবিভাগ সূত্রে খবর, শ্বেত পলাশের সন্ধান পাওয়া গেছে পুরুলিয়া জেলার হুড়া, পুঞ্চা, বান্দোয়ান, বলরামপুর, বাঘমুন্ডি, রঘুনাথপুর এলাকায়। খবর বলছে, শ্বেত পলাশ গাছ রয়েছে অযোধ্যা পাহাড়ের ২ টি এলাকাতেও। পুরুলিয়া জুড়ে সর্বমোট ১৫ টি শ্বেত পলাশের সন্ধান মিলেছে এখনো পর্যন্ত। উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা বলছেন এই গাছ দুষ্প্রাপ্য বৃক্ষ। ঔষধি গুন ছাড়াও সৌন্দর্যে শ্বেত পলাশ টুরিস্টদের মন জয় করে নেয়। এই গাছ আগামী দিনে পুরুলিয়ার পর্যটন শিল্পকে আরো ত্বরান্বিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সন্ধান পাওয়া শ্বেত পলাশ গাছগুলির চারিদিকে কাঁটাতারের ফেন্সিং দিয়ে নজরদারির ব্যবস্থা করেছে বনদপ্তর ও প্রশাসন। এছাড়া উদ্ভিদের সংরক্ষণের জন্য এবং এর সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য টিস্যু কালচারের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। মাটিতে পড়ে যাওয়া শ্বেত পলাশ ফুল থেকে জিনপুল সংরক্ষণ করে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে আলাদা ভাবে চারা তৈরি করে সাদা পলাশ বৃক্ষের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বনদপ্তর। আশা করা যাচ্ছে আগামী দিনে এই ফুল আরো বেশি সংখ্যায় ফুটে থাকবে পুরুলিয়ার আনাচে-কানাচে।

আরো পড়ুন  Madhyamik Result Date 2024: মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলপ্রকাশ কবে? দিনক্ষণ জেনে নিন পরীক্ষার্থীরা

বাংলার খবর, বাঙালির খবর। আমরা আপনাদের কাছে দ্রুত খবর পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর।