সাতকাহন প্লাস নিউজ ডেস্ক: টেলিভিশনের (Television) পরিচিত মুখ অভিনেত্রী মানসী সিনহা (Manasi Sinha)। তবে তিনি এখন আর শুধুই অভিনেত্রী হন। অভিনেত্রীর নতুন পরিচয় তিনি এখন পরিচালক। সম্প্রতি মুক্তি পেতে চলেছে মানসী সিনহার (Manasi Sinha) পরিচালনায় নতুন ছবি ‘এটা আমাদের গল্প’। এসবের মধ্যে আর্থিক প্ররোচনার ভয়ংকর অভিযোগ উঠেছিল অভিনেত্রী মানসীর বিরুদ্ধে। কিছুদিন আগে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অভিনেত্রী বলেন, বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলবেন তিনি। অবশেষে মুখ খুললেন অভিনেত্রী। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অটোগ্রাফ নিয়ে ২৬ লক্ষ টাকার প্রতারণা করা হয়েছে তাঁর সঙ্গে।
গোটা ঘটনাটি তুলে ধরেছেন অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ২০২০ সালে তার পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘এটা আমাদের গল্প’ ছবির শ্যুটিং শুরু হয়। তখন এই ছবির প্রযোজক ছিলেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ। ছবির প্রযোজক শর্মিষ্ঠা দীপঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় নামক এক ব্যক্তিকে নিযুক্ত করেছিলেন ফাইন্যান্সার হিসেবে। এই ছবির জন্য দীপঙ্কর অনেক টাকা বিনিয়োগ করেন। তারপর হঠাৎ করেই টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেন তিনি। এরই মধ্যে হঠাৎ করে উধাও হয়ে যান প্রযোজক শর্মিষ্ঠা ঘোষ। দীপঙ্কর ও মানসী দুপক্ষ থেকেই শর্মিষ্ঠাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয় যে, শর্মিষ্ঠা ছবি শেষও করেনা আবার কাউকে টাকাও দেয়না!
ঘটনাটি এতটাই ঘুরপথে ঘটেছিল যে মানসীরা ঠিক করেছিলেন শর্মিষ্ঠার থেকে ছবির NOC নিয়ে তাঁরা অন্য প্রযোজককে দিয়ে দেবেন তবে সেটা নতুন প্রযোজককে বিস্তারিত জানিয়েই। এদিকে শর্মিষ্ঠা দীপঙ্করের নাম উল্লেখ করতে চায় না। শর্মিষ্ঠা বলেন, দীপঙ্করের সঙ্গে তাঁর কোনো চুক্তি হয়নি! অভিনেত্রী বলেন, তাঁর কাছে তখন NOC নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাই সেটি তিনি নিয়েছিলেন। এরপর ধাগা প্রোডাকশনের শুভঙ্কর মিত্র ও সুভাষ বেরার হাতে ছবির দায়িত্ব যায়। অভিনেত্রী নতুন প্রযোজকদের জানিয়েছিলেন, দীপঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম এখানে নেই, তবে ছবির শুরুতে তিনি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। টাকা ফেরত দেওয়ার সময় এই বিষয়টি ভেবেচিন্তে দিতে হবে যাতে দীপঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় তার টাকা ফেরত পেয়ে যান।
ইতোমধ্যে দীপঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় মানসী সিনহার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনেন যে, তার টাকা অভিনেত্রী আত্মসাৎ করে নিয়েছেন! অভিযোগ শুনে থানায় যান মানসী। অভিনেত্রীর সঙ্গে যান শুভঙ্কর মিত্র। মানসী থানায় গিয়ে বলেন, দীপঙ্কর ভুল করেছেন! তিনি কোন চুক্তিপত্র ছাড়া শর্মিষ্ঠা কে টাকা দিয়েছেন। তিনি যদি চুক্তিপত্র করতেন, তাহলে চাপ শর্মিষ্ঠাকেই দেওয়া যেত। তা সত্ত্বেও টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। মানসী বলেন, আমি তাকে আশ্বাস দিয়েছিলাম দীপঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের টাকা ফেরত পেয়ে যাবেন। বদলে তিনি আমার বিরুদ্ধে স্টেপ নিলেন। এমনকি ছবিটা বন্ধ করতে চাইলেন!
এরপর যেটা হল সেটা আরও ভয়ংকর, ছবির শ্যুটিং শুরুর দিকে দীপঙ্কর মানসীর কাছ থেকে অটোগ্রাফ নিয়েছিলেন। দীপঙ্কর বলেছিলেন, তাঁর বউ মানসীর অনুরাগী। একজন অভিনেত্রী হওয়ার খাতিরে হাসিমুখে অটোগ্রাফ দিয়েছিলেন মানসী। যদিও দীপঙ্কর জানতো না, এই সই মোটেও অভিনেত্রীর অফিশিয়াল সই নয়। দীপঙ্কর যে পাতায় অভিনেত্রীর সই নিয়েছিলেন এখানে টাইপ করে এরকম একটা অভিযোগ খাড়া করেন যে, মানসী তার থেকে সমস্ত টাকা নিয়েছে এবং সেই টাকা ফেরত দিচ্ছে না। অর্থাৎ অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে আর্থিক প্ররোচনার অভিযোগ তোলেন দীপঙ্কর। এমনকি সংবাদমাধ্যমিকেও তিনি জানান ঘটনাটি। এদিকে অভিনেত্রীর সাদা পাতার সই জাল করে দীপঙ্কর যে ২৬ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ তোলে, তার বিরুদ্ধে চুপ থাকেননি অভিনেত্রী। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এরপর পুলিশের তৎপরতায় গ্রেপ্তার হন দীপঙ্কর।
বিনোদন, টেলিভিশন, লাইফস্টাইল, ট্রাভেল, ব্যবসা, টেকনোলজি, শিক্ষা, কর্মসংস্থান সংক্রান্ত আরও খবর পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে।
বাংলার খবর, বাঙালির খবর। আমরা আপনাদের কাছে দ্রুত খবর পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর।